সার্চ ইঞ্জিন কীভাবে কাজ করে? সহজভাবে বোঝার জন্য বিস্তারিত গাইড
বর্তমান ইন্টারনেট দুনিয়ায় তথ্য খোঁজার সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য মাধ্যম হল সার্চ ইঞ্জিন। আর গুগল হচ্ছে বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় সার্চ ইঞ্জিন। আমরা যখন “সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন” বা SEO সম্পর্কে জানতে চাই, তখন একেবারে শুরুতেই যে প্রশ্নটি আসে তা হলো — সার্চ ইঞ্জিন আসলে কীভাবে কাজ করে?
এই প্রশ্নের উত্তর বোঝার জন্য সার্চ ইঞ্জিনের কাজকে সাধারণত তিনটি ধাপে ভাগ করা হয়:
- ক্রলিং (Crawling)
- ইনডেক্সিং (Indexing)
- র্যাঙ্কিং ও রেজাল্ট দেখানো (Ranking & Retrieval)
১. ক্রলিং (Crawling) – ওয়েবসাইট খুঁজে বের করা
ইন্টারনেটে প্রতিদিন অসংখ্য নতুন ওয়েবসাইট এবং পেজ তৈরি হচ্ছে। এখন প্রশ্ন হলো, সার্চ ইঞ্জিন এত পেজের খবর রাখে কীভাবে?
এর জন্যই রয়েছে সার্চ ইঞ্জিনের “বট” বা “স্পাইডার”। এই স্বয়ংক্রিয় সফটওয়্যারগুলো ইন্টারনেট ঘুরে বেড়ায় এবং প্রতিনিয়ত নতুন ও পুরাতন পেজ খুঁজে বের করে।
যখন একটি ওয়েবসাইট তৈরি হয় বা আপডেট হয়, তখন সার্চ ইঞ্জিনের এই বটগুলো সেই পেজে গিয়ে দেখে — নতুন কি আছে, আগের কনটেন্ট কি বদলেছে। বিভিন্ন ক্রলিং রুলস অনুযায়ী এটি সিদ্ধান্ত নেয় যে, পেজটি ইনডেক্স করার উপযুক্ত কি না।
উদাহরণ: আপনি যদি আপনার ওয়েবসাইটে নতুন একটি ব্লগ পোস্ট করেন, তাহলে গুগলের বট সেটি খুঁজে বের করে এবং রেকর্ড করে রাখে।
২. ইনডেক্সিং (Indexing) – তথ্য বিশ্লেষণ ও সংরক্ষণ
ক্রলিংয়ের পর সার্চ ইঞ্জিন পেজটির কনটেন্ট বিশ্লেষণ করে। এই ধাপেই সার্চ ইঞ্জিন বোঝে পেজটি আসলে কী নিয়ে লেখা।
এখানে নিচের বিষয়গুলো বিশ্লেষণ করা হয়:
- পেজের টাইটেল
- হেডিং গুলো
- ব্যবহৃত কীওয়ার্ড
- পূর্ণ কনটেন্ট
- ইমেজ ও মিডিয়া
সবকিছু বিশ্লেষণ করে একটি বিশাল ডেটাবেজে সংরক্ষণ করা হয়। এখান থেকেই পরবর্তীতে রেজাল্ট দেখানো হয়।
উদাহরণ: আপনার কোনো পেজে যদি লেখা থাকে “সেরা হোটেল ঢাকায়”, তাহলে গুগল সেটি “ঢাকার সেরা হোটেল” সংক্রান্ত সার্চের জন্য উপযুক্ত বলে মনে করে।
বিঃদ্রঃ এ কারণে অন-পেজ এসইও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আপনি যদি ঠিকঠাকভাবে কীওয়ার্ড, হেডিং এবং কনটেন্ট তৈরি করেন, তাহলে সার্চ ইঞ্জিন সেটিকে ভালোভাবে ইনডেক্স করতে পারে।
৩. র্যাঙ্কিং ও রেজাল্ট দেখানো (Ranking & Retrieval)
এখন ধরি কেউ সার্চ করলো — “সেরা হোটেল ঢাকায়”।
তখন সার্চ ইঞ্জিন তার ইনডেক্স ডেটাবেজ থেকে সেই বিষয়ক পেজগুলো খুঁজে বের করে এবং অ্যালগরিদম অনুযায়ী র্যাঙ্ক করে ফলাফল দেখায়।
যে বিষয়গুলো র্যাঙ্কিং-এ প্রভাব ফেলে:
- পেজের প্রাসঙ্গিকতা (Relevance)
- কনটেন্টের মান (Content Quality)
- সাইটের লোডিং স্পিড
- ব্যাকলিংক (অন্য সাইট থেকে রেফারেন্স)
- মোবাইল ফ্রেন্ডলি ডিজাইন
- ইউজার এক্সপেরিয়েন্স (UX)
যে পেজগুলো এসব দিক থেকে উন্নত, সেগুলোই গুগলের রেজাল্টে উপরের দিকে দেখানো হয়।
শেষ কথা
সার্চ ইঞ্জিনের কাজকে এক কথায় বলা যায়: পেজ খোঁজে (ক্রলিং), বিশ্লেষণ করে (ইনডেক্সিং), এবং বাছাই করে দেখায় (র্যাঙ্কিং)।
এই তিনটি ধাপ বোঝা খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যদি আপনি এসইও শিখতে চান বা নিজের ওয়েবসাইটকে সার্চ ইঞ্জিনে ভালো র্যাঙ্কে দেখতে চান।
আশা করি, এই পোস্ট থেকে আপনি গুগল সার্চ ইঞ্জিনের কাজের ধরন সম্পর্কে একটি পরিষ্কার ধারণা পেয়েছেন।
মন্তব্যসমূহ (0)
অনুগ্রহ করে মন্তব্য করার জন্য লগইন করুন।
এখনো কোনো মন্তব্য করা হয়নি। প্রথম মন্তব্যটি আপনি করুন!